+91 98304-64566 atnmediicaree@gmail.com

ভোজ্যতেলের ভেতরে সরিষার তেল গ্রহণযোগ্যতা ও খাদ্য উপযোগিতা বরাবর ই বেশি। অনেকেই তাদের প্রতিদিনের রান্নার কাজে সরিষার তেল ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এই সরিষার তেলে রয়েছে বেশকিছু উপকারিতা। কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা যায় যে সরিষার তেল একটি বিশেষ ধরনের উপাদান আছে যা কলোরেক্টাল এবং গ্যাস্ট্রোইনটেসটাইলনাল ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আগের যুগের দাদী নানীরা ত্বকের যত্নে সরিষার তেল ব্যবহার করতেন। বর্তমানে এই তেল শুধু রান্নার কাজে ব্যবহার করা হলেও রূপচর্চা এবং গুনাগুন কোন অংশে কম নয়। ওমেগা আলফা 3 ওমেগা 3 ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ উৎস হওয়ায় সরিষার তেল কে স্বাস্থ্যকর বলা হয়। এর ঔষধি গুনাগুন এর জন্য প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আছেন এই তেল ত্বক চুল ও স্বাস্থ্যের জন্য সরিষার তেলে অসাধারণ উপকারী। সামান্য কাটাছেঁড়ায় এন্টিসেপটিক এর কাজ করে সরিষার তেল সন্ধিস্থলে ব্যথা করে।

সরিষার তেল শরীরের কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় যার হূদরোগে আশঙ্কা কমায়। নিদ্রাহীনতা ও ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। শরীরে ব্যথা কমায় ও শ্বাসকষ্টের প্রবাহ গ্রাস করে। এছাড়া রক্তসঞ্চালন, হজম প্রক্রিয়া এবং হরমোন নিঃসরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।  সরিষার তেল আপনার শরীরের পাচকরস নিঃসরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। ফলে ক্ষুধা বাড়ে।

সরিষার তেল চুলকে ঝলমলে করে তোলে খুশকি দূর করে এবং চুল বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সরিষার তেল চুল এবং মাথায় তালুতে ম্যাসাজ করুন এটি চুল পাকা রোধ করবে শরীরে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন আছে এটি নিয়মিত মাথার তালুতে ম্যাসাজ করার ফলে নিয়মিত নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে এবং ত্বকের কালো দাগ দূর করতে সরিষার তেল অনেক কার্যকরী।

সরিষার তেল মাথা ব্যথা কমায় শুষ্ক ত্বক মসৃণ ও কোমল করে। ঠোঁটের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বকে প্রদাহ দূর করে শীতের সরিষার তেল মাখলে ত্বক সুন্দর থাকে। পোকামাকড় সরিষার তেল সহ্য করতে পারে না এই তেল ব্যবহার করলে পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে সরিষার তেল নাকের বন্ধ ভাব দূর করে, কানে ব্যথা কানের ড্রপ এর বিকল্প, কাটাছেঁড়ায় অ্যান্টিসেপটিক এর কাজ করে, নিয়মিত এই তেল মালিশ করলে বাতের ব্যথা উপকার পাওয়া যায়, দাঁত মজবুত করে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে সরিষার তেল।

১। ওমেগা ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ – সরষে তেল ওমেগা 3 এবং ওমেগা সিক্স ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ এবং ডিপ্রেশনের মতন রোগ প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

২। ব্রেন পাওয়ার বৃদ্ধি পায় – সরষের তেলে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাট স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে সেইসঙ্গে মনোযোগ বৃদ্ধি এবং সার্বিকভাবে মস্তিষ্কে কর্মক্ষমতার উন্নতি তেও সাহায্য করে।

৩। শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়- একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে সরষের তেল এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে হার্টের রোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। সেইসঙ্গে শরীরে প্রতিটি কোনায় যাতে ঠিকমত রক্ত পৌঁছে যেতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখে।

৪। হার্টের জন্য ভালো- নিয়মিত সরষের তেল খেলে হার্টের কোন ক্ষতি হয় না বরং হৃদপিণ্ড কর্মক্ষমতা বাড়ে সেইসঙ্গে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে আশঙ্কায় কিন্তু এক্ষেত্রে কৃষকদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে ঠিকই কিন্তু একাধিক গবেষণায় এইটাই প্রমাণিত।

৫। ঠান্ডা লাগার হাত থেকে বাঁচায়- এখনো ঠাকুরমা দিদিমারা নাতি-নাতনিদের ছোট থাকতে সরষে তেল মাখিয়ে থাকে কেন এমনটা করে জানেন কারণ ঠান্ডা লাগার সমস্যা থে cকে শুরু করে একাধিক রোগের হাত থেকে বাঁচাতে এই তেলটি কোন বিকল্প হয় না বললেই চলে।

৬। পেটে ব্যথা এবং মাথা যন্ত্রণা নিমেষে কমায়- সুরজিতের উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান যেকোনো ধরনের প্রবাহ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে বিশেষত মাথা যন্ত্রণা এবং তলপেটে অস্থির প্রাকৃতিক উপাদান দারুণ কাজে লাগে।

৭। ঠোঁটকে কোমল ও মসৃণ রাখতে- লিপবাম ব্যবহার করার পরও ঠোঁট ফাটা থেকে মুক্তি মিলছে না সরিষার তেল মাসাজ করুন ঠোঁটে এটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করবে ।

৮। ত্বকের কালচে ভাব বা দাগ দূর করতে- মিত্রতা বা ত্বকের কালচে দাগ দূর করতে পারে সরষের তেল ফেসপ্যাক। বেসনের সঙ্গে পরিমাণমতো সরষের তেল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশন টিক টক এ ফেমাস করে ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসবে তা ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে লেবুর রসের ব্যবহার করতে পারেন।

৯। অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে- সরষে তেল এ রয়েছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান যা অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করে এজন্য পরিমাণ অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল একসঙ্গে মিশিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন গরম তোয়ালে দিয়ে চুল পেঁচিয়ে কিছুক্ষণ পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন চুল।

১০। চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে- সরিষার তেলে থাকা বেটা ক্যারোটিন , ফ্যাটি এসিড, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সরিষা তিল থাকা ফ্যাটি এসিড চুল পুনরুজ্জীবিত করে তোলে। চুলের গোড়া মজবুত করে এবং মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। নিয়মিত সরিষার তেল ব্যবহারে চুল পড়া কমে।

১১। দাঁতের যত্নে- লেবুর রসের সঙ্গে সরিষার তেল মিশিয়ে তাতে মাসাজ করুন নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে দাঁতের হলদে ভাব দূর হওয়া পাশাপাশি দাঁতের গোড়া শক্ত হবে।

১২। খুশকি দূর করতে- নিয়মিত মাথার তালুতে সরিষার তেল মাসাজ করলে খুশকি এছাড়া মাথার ত্বকে এলার্জি থাকলে সেটাও দূর করে সরিষার তেল।

১৩। শরীরের ঘাম- সরিষার তেল শরীর উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরের ঘাম বের হওয়ার গ্রন্থ গুলি পরিষ্কার ও সচল রাখে। ফলে শরীরের বর্জ্য পদার্থগুলো বের হয়ে যায়।

১৪। পোকামাকড় থেকে রক্ষা- পোকামাকড় স্বরসতীর সহ্য করতে পারেনা তেল ব্যবহার করলে পক্ষ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।