লকডাউন একটু একটু করে উঠে গিয়ে আমরা আনলকের দিকে যাচ্ছি। এখন আপনাকে যখন বাইরে যেতে হচ্ছেই, বা আরও ভালো করে বললে লকডাউন যখন একেবারে উঠে যাবে তখন বাইরে আপনি যখন যাবেন তখন কি কি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে তা আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব ভাবছি। যেহেতু করোনার হাত থেকে আমরা এখনও মুক্তি পাই নি, বরং সংক্রমণ আরও বেড়ে চলেছে, তাই এই ১৪টি জিনিস কিন্তু আপনাকে মেনে চলতেই হবে বাইরে যাওয়ার সময়ে।
১। দূরত্ব মানতেই হবেঃ- আপনাকে নিজেকে সুস্থ রাখতে হবে নিজেকেই। লকডাউন চলার সময়েই যে পরিমাণ মানুষ বাইরে গিয়েছিল তাতে বুঝতেই পারছেন লকডাউন উঠলে আরও কত লোক বাইরে যাবে, কত বেশি পরিমাণ মানুষের সংস্পর্শে আপনি আসবেন। তাই বাইরে গেলে যতটা সম্ভব অন্য মানুষের থেকে দূরে দূরে দাঁড়ান। কেউ গায়ের কাছে চলে আসলে তাঁকে সরে দিয়ে দাঁড়াতে বলুন।
২। মাস্ক ছাড়া ভুল করেও বাইরে বেরবেন নাঃ- এটা এখন আপনার অভ্যেসের মধ্যে চলে আশা উচিৎ। জাপানের মানুষ কিন্তু সব সময়ে মাস্ক পরে বাইরে যান। এবার আমাদের সেই নিয়ম পালন করতে হবে। মাস্ক পরার উদ্দেশ্য হল যেন বাইরের ধূলিকণা বা হাচি-কাশির ড্রপলেট আপনার মুখের কাছে না আসে।
৩। স্যানিটাইজার নিজের কাছে রাখুনঃ- এখন কিন্তু স্যানিটাইজার সব দোকানে পেয়ে যাবেন। বাইরে যেতে হলে অবশ্যই কিনে নিন আর সঙ্গে রাখুন। অ্যালকোহলের মাত্রা বেশি আছে এমন স্যানিটাইজার কিনবেন। প্রায় ১০ মিনিট পর পর স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নেবেন অবশ্যই। বাইরে গেলে কোনও জায়গায় যদি হাত রাখতে হয়, যেমন ধরুন আপনি বাসের হ্যান্ডেল ধরে উঠলেন বা ট্যাক্সির দরজা বন্ধ করলেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৪। গ্লাফসও ব্যবহার অবশ্যই করুনঃ- এটা কিন্তু এখনও আমাদের অভ্যেসের মধ্যে আসেনি। হাত দিয়ে আমরা সবচেয়ে বেশি জিনিস স্পর্শ করি, তাই হাত সবচেয়ে বেশি সংক্রামিত হয়। তাই গ্লাফস ব্যবহার করুন অবশ্যই। পারলে দুটো গ্লাফস সঙ্গে রাখুন। আপনার কর্মস্থলে গিয়ে অন্য একটা গ্লাফস পরে ফেলুন রাস্তা দিয়ে আসা গ্লাফস খুলে ফেলে। আর রোজ বাড়ি ফিরে মনে করে গ্লাফস ধুয়ে ফেলুন।
৫। অফিসেও নিজের ব্যবস্থা নিজে করুনঃ- অফিসে আপনার ডেস্ক বা অন্য জায়গা অফিস হয়তো স্যানিটাইজ করছে। কিন্তু আপনাকেও আপনার নিজের জায়গা স্যানিটাইজ করতেই হবে। সঙ্গে করে স্যানিটাইজার স্প্রে করার জিনিস নিয়ে যান। অফিসে গিয়ে আগে ডেস্কটপে, বসার টেবিল চেয়ারে সেটি স্প্রে করুন, তারপর বসুন। বিশ্বাস করুন, এতে অফিস কিচ্ছু মনে করবে না।
৬। জড় বস্তুর যত্ন নিনঃ- আপনার সঙ্গে যে গ্যাজেট রয়েছে, যেমন ধরুন মোবাইল, ল্যাপটপ, ঘড়ি এই সবের কিন্তু স্যানিটাইজ করা দরকার। এগুলি বাইরে থেকে এসে রোজ স্যানিটাইজ করুন। এগুলি স্যানিটাইজ করার জন্য আলাদা মিক্সচার পাওয়া যায়। আপনি হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকানেও পেয়ে যাবেন সেই মিক্সচার, ব্যবহার করুন অবশ্যই।
৭। বাড়িতে আসার পর অবশ্যয়ী দরকারঃ- সারাদিন পর বাড়িতে এসে কী করবেন? প্রথমেই জামা প্যান্ট বাইরে রেখে দিন। তারপর সারা গায়ে স্যানিটাইজার স্প্রে করুন। সোজা বাথরুমে গিয়ে সাবান দিয়ে স্নান করে নিন, পারলে গরম জলে। বেরিয়ে হাতে আরেক বার স্যানিটাইজার লাগিয়ে নিন। এবার আপনি পুরোপুরি নিশ্চিন্ত।
৮। দরকার ছাড়া বাইরে নয়ঃ- আপনি যখন বাইরে যাবেন তখন অবশ্যই নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনার এই বাইরে যাওয়াটা কি খুব দরকার? যদি উত্তর হয় না, তাহলে যাবেন না। আমাদের স্বভাব একটু বাইরে গিয়ে ঘুরে আশা, আড্ডা মারা এবং সেটি স্বাভাবিক। কতদিনই বা ঘরে বসে থাকা যায়! কিন্তু নিজেদের আর পরিবারের স্বার্থে আমাদের একটু কঠোর হয়ে বিনা দরকারে বাইরে যাওয়া বন্ধ করতেই হবে।
৯। অনলাইন এ টাকা পাঠানোর চেষ্টা করুনঃ- ক্যাস টাকা দিয়ে যাওয়া মানেই হাতে হাত লাগা। তাতে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই বিভিন্ন মানি অ্যাপ মোবাইলে রাখুন, ডেবিট কার্ড সঙ্গে রাখুন সবও সময়ে। এভাবেই টাকা লেনদেন করুন।
১০। একান্ত দরকারেই হাসপাতালঃ- হ্যাঁ, খুব দরকারে পড়লে তবেই হাসপাতাল যান। ক্যানসার, ডায়ালেসিস এই ধরণের সমস্যা বা দরকারি অপারেশন হলে অবশ্যই যান। কিন্তু শুধু ডাক্তার দেখানোর জন্য এখনই না যাওয়া ভালো। হাসপাতাল থেকে কিন্তু অনেক সময়ে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস আর এটা প্রমাণিত।
১১। আদার ব্যবহারঃ- আদার মধ্যে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে। তাই বাইরে যাওয়ার সময়ে মুখে আদার কুচি রাখুন। আদা কুচি করে অল্প নুন মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে নিন। এতে আপনি খানিক ভালো থাকবেন আশা করা যায়।