মুখের সমস্যার এক বাড়তি সংযোজন এর নাম হলো ব্ল্যাকহেডস। এটা বেসিক্যালি এক প্রকারের একনে যা আপনার ত্বকের পোরস্ ও তৈলগ্রন্থি ভরাট করে বুজিয়ে দেয়। পরিণাম হয় মুখের টি-জোনের জীর্ণদশা।
ব্ল্যাকহেডস এর আক্রমণের জায়গা প্রধানত নাকের ডগা, থুতনি ও কপাল। প্রকৃতপক্ষে, এইসব অঞ্চলে মৃতকোষ ও ময়লা জমে ত্বককে বিবর্ণ ও অনুজ্জ্বল করে তোলে।
ব্ল্যাকহেডস এর এই কালচে ভাব কাটানোর জন্য অনেকেই পার্লার এর খরচবহুল ট্রিটমেন্ট এর শরণাপন্ন হন, কিন্তু বাড়িতেই আমাদের সাজেস্ট করা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড এর কার্যক্ষমতা এর বিশ্বাস রেখেই দেখুন কথা দিচ্ছি ঠকবেন না।
হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ট্রিটমেন্টের স্টেপ বাই স্টেপঃ
কয়েকটি সহজ পদক্ষেপ অনুসরণ করেই আপনার কার্যসিদ্ধি কিন্তু হাতের মুঠোয়।
ফেস ক্লিনিংঃ
সবার প্রথমে আপনার মুখ পরিষ্কার করে নেয়া জরুরি কারণ মুখে তেল,ময়লা,ধূলোবালি জমে থাকলে থেরাপি কখনই স্কিনের গভীরে প্রবেশ করতে পারবেনা আর লক্ষ্য ও ফলপ্রসূ হবে না। মাইল্ড ফেস ক্লিঞ্জার দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন। এটা অতিরিক্ত তেল চিটচিটে ভাব দূর করবে। ব্যাকটেরিয়া এর সংক্রমণ প্রতিহত হবে। শেষে শুকনো করে নেবেন। ক্লিঞ্জার না ইউজ করতে চাইলে মুখে ভাপ নিতে পারেন, এতে মুখের রোমকূপগুলি উন্মুক্ত করবে।
এক্সফোলিয়েশনঃ
এই বার ত্বকের মৃতকোষগুলি সাফ করবার পালা। এক্সফোলিয়েশন করবার জন্য ফেস স্ক্রাব ইউজ করুন। ১টেবিল চামচ চিনি ও ১টেবিল চামচ কমলালেবুর রস মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে নিন ও স্কিনে এপ্লাই করুন। যদি এটা ত্বকের আবরণে রাফ অনুভূতি আনে তবে বেকিং সোডার পেস্ট ও ইউজ করে দেখতে পারেন।
মূল পর্যায়ঃ
এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটা সঠিকভাবে না পালন করলে আগের সব প্রস্তুতিই মাটি হবে। ৩% হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ও জল সমপরিমাণে নিয়ে একটা পাত্রে মেশান। এবার তাতে একটা কটন বল নিয়ে ডুবিয়ে রাখুন। ও সেটা এবসর্ব হতে দিন। পরবর্তী তে তুলো নিয়ে মুখের ব্ল্যাকহেডস যেসব জায়গায় হয়েছে সেখানে ড্যাব করে নিন আলতো ভাবে। ৩০-৩৫ মিনিট অপেক্ষা করুন সল্যুশনটা লাগিয়ে। খেয়াল রাখবেন যাতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড কোনোভাবেই ভ্রু ও চুলের সংস্পর্শে না আসে, কারণ এটাতে ত্বক ব্লিচকারী উপাদান থাকে।
শেষ ধাপঃ
এবার আপনার ত্বককে আর্দ্রতা দেবার সময়। তবে এর জন্য ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার এর দরকার নেই। জোজোবা বা অলিভ অয়েল থাকলে সেটাই ম্যাসাজ করে নিন হাতের তালুতে নিয়ে মুখের চারিপাশে চক্রাকারে। এটা ত্বককে স্মুথ করবে ও ময়েশ্চার লক করে। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড শক্ত হয়ে বসে যাওয়া ব্ল্যাকহেডস গুলোকে ডিজলভ করে নরম করে গলিয়ে দেয় ফলে আপনার ত্বকের লাবণ্য ও জেল্লা ফিরে আসে মসৃণতা বাড়াতে।
সাবধানতাঃ
এক্সফোলিয়েশন এর সময় খুব বেশি ঘষবেন না। এতে ত্বকে পিগমেন্টেশন তথা ইরিটেশন হতে পারে। অনেকক্ষেত্রে ত্বক শুষ্ক হতেও দেখা গেছে।
হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড- এ অনেকের এলার্জি হতে দেখা গেছে। তারা লেবুর রস বা মধু সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করুন এই সমস্যা আর থাকবে না। পিম্পল ও একনের ঝঞ্ঝাট থেকেও চিরমুক্তি মিলবে।
ব্ল্যাকহেডস হয় মূলত লাগাতার ত্বক নোংরা রাখার ফলে। পরিচর্যার অভাবেই ত্বকে আস্তরণ পড়ে ব্ল্যাকহেডস জন্মায়। তাই নিয়মিত নিজের তোয়ালে,চিরুনি ও পিলোকভার বদল করার অভ্যাস তৈরি করুন।