+91 98304-64566 atnmediicaree@gmail.com

আমরা বেশির ভাগ মানুষ জানি যে আমাদের চুলের প্রধান উপাদান হল কেরাটিন। আর এই কেরাটিনের জন্য সবচেয়ে দরকারি উপাদান হল প্রোটিন। আমরা চুলে সবচেয়ে বেশি যে সব জিনিস ব্যবহার করি, যেমন দই, ডিম, এই সবের মধ্যে প্রোটিন বেশি থাকে বলেই আমরা চুলে এই সব জিনিস ব্যবহার করি।

তাই চুল ভাল রাখতে কোন প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন সেটা জানার থেকেও বেশি জানা দরকার, কোন কোন প্রোটিন আমাদের চুলের জন্য ভাল। তাহলেই আপনার চুলের জন্য কোন কোন উপকরণ সবচেয়ে কার্যকরী সেটা আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন।

১. ভিটামিন ‘এ’

ভিটামিন ‘এ’ সেল বা কোষের বৃদ্ধির জন্য খুব দরকারী। চুলের গ্রোথের জন্য তাই সবচেয়ে দরকারী হল এই ভিটামিন। এছাড়া ভিটামিন ‘এ’ আমাদের স্কিনের অয়েল সিক্রিয়েশন বজায় রাখে। ফলে স্ক্যাল্প শুকিয়ে যায় না। তাই চুলের রুক্ষ হওয়া বা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম হয়। তবে অতিরিক্ত ভিটামিন ‘এ’ ব্যবহার চুল পড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে। তাই পরিমিত ভিটামিন ‘এ’ ব্যবহার করাই ভাল।

কমলালেবু, সবুজ সবজি, গাজর, কুমড়ো, পালং শাক। দুধ, ডিম, দই, কড লিভার অয়েল।

সবচেয়ে ভাল হয় এই খাবারগুলি খেলে। এছাড়াও সপ্তাহে এক দিন করে যদি ডিম, দই আর তার সঙ্গে অল্প পাতিলেবুর রস মিশিয়ে একটা প্যাক বানিয়ে চুলে লাগাতে পারেন তাহলে খুব ভাল হয়। প্যাল চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললেই হবে।

২. ভিটামিন ‘বি’

ভিটামিন ‘বি’, এর মধ্যেও আবার ভিটামিন ‘বি’ সেভেন চুলের জন্য সবচেয়ে দরকারি। ভিটামিন ‘বি’ সেভেনকে আমরা বায়োটিন বলি। হেয়ার লস ট্রিটমেন্টে এই বায়োটিনের প্রয়োগ ব্যাপক। ভিটামিন বি ব্লাড সেল তৈরি করতে সাহায্য করে। রেড ব্লাড সেল অক্সিজেন বহন করে। তাই আপনার চুলের কাছাকাছি ব্লাড সেল যত ভাল থাকবে তত চুলের কোষে অক্সিজেন যাবে। এতে চুলের গ্রোথ ভাল হবে।

সবজি, আমন্ড, মাংস, মাছ, সি-ফুড, ডিমের কুসুম, লিভার।

এই ভিটামিনের ক্ষেত্রে বাইরে থেকে ব্যবহারের থেকেও বেশি উপকার খেলে। রোজ সকালে চারটে জলে ভেজানো আমন্ড খাওয়া চুলের জন্য খুব উপকারী। এছাড়া রোজ ডায়েটে ৭০ গ্রামের মাছ, মাংস হলে ১০০ গ্রাম মতো রাখা খুব দরকার।

৩. ভিটামিন ‘সি’

ভিটামিন ‘সি’ এর মধ্যে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। ভিটামিন সি কোলাজেন নামের প্রোটিন উৎপাদন করে, যা চুলের স্ট্রাকচার বা গঠনের জন্য খুব দরকারি। ভিটামিন সি এর অভাব হলে খুব তাড়াতাড়ি চুল পড়তে শুরু করে। চুলের ডগা ভাঙার প্রধান কারণ হল ভিটামিন সি কম্রে যাওয়া।

মুলত টক জাতীয় ফল, যাকে আমরা বলি সাইট্রাস ফ্রুট, মানে লেবু। এছাড়া পেয়ারা, স্ট্রবেরি এইসবের মধ্যেও ভিটামিন সি আছে।

আপনার হাতের কাছে থাকা সহজ উপাদান পাতিলেবু। রোজ সকালে খালিপেটে গরম জলে পাতিলেবুর রস নিয়ে খান। এছাড়া চুলের জন্য ব্যবহার করা যে কোনও প্যাকের মধ্যে দিয়ে দিন পাতিলেবুর রস। আপনি যদি কোনও তেল ব্যবহার করেন তার মধ্যেও মিশিয়ে দিন পাতিলেবুর রস। তারপর সেই তেল চুলে লাগান।

৪. ভিটামিন ‘ডি’

কম পরিমাণে ভিটামিন ‘ডি’ থাকলে আমাদের অ্যালোপেশিয়ার সমস্যায় ভুগতে হয়। অ্যালোপেশিয়া মানে খুব বেশি পরিমাণে চুল পড়া, মাথায় টাক হয়ে যাওয়া। ভিটামিন ডি নতুন হেয়ার ফলিকল তৈরি করতে সাহায্য করে। তাই ভিটামিন ডি কম থাকলে নতুন চুল গজাতে সমস্যা হয়।

ভিটামিন ডি এর সবচেয়ে বড় উৎস রোদ। তা বলে এই গরমে রোদে ঘুরতে যাবেন না। কিন্তু শীতকালে রোদ অবশ্যই গায়ে লাগাবেন। এছাড়াও মাছ, ডিম, লিভার, মাশরুমের মধ্যে ভিটামিন ডি আছে। মাশরুম ভিটামিন ডি এর খুব ভাল উৎস।

এই ক্ষেত্রেও বাইরে ব্যবহারের থেকেও খাওয়া উপকারী। মাছের মধ্যেও ফ্যাটি ফিস বেশি খাওয়া উচিত। ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে কড লিভার অয়েল ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন।

৫. ভিটামিন ‘ই’

একটি গবেষণা দেখিয়েছে, যে সব মানুষদের অত্যধিক চুল পড়ছিল, তাঁদের ওপর ভিটামিন ই প্রয়োগ করার পর আট মাসের মধ্যে ৩৫% চুলের বৃদ্ধি হয়েছে। এতে বোঝাই যাচ্ছে যে এই ভিটামিন আমাদের চুলের জন্য কত ভাল। চুলের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন ই খুব ভাল।

আমন্ড, পালং শাক, অ্যাভোকাডো, ফল, সবজি। উপরে যে খাবারের নাম বললাম সেগুলি তো খাবেনই। কিন্তু তার সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ব্যবহার করা যে কোনও হেয়ার প্যাকে ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে ভিতরের তেল যোগ করে দিন। তারপর ভাল করে মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করুন। খুব ভাল ফল পাবেন এতে।