করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য যে অতিরিক্ত মাত্রায় স্টেরয়েডের ব্যবহার করা হচ্ছে, তা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফেলছে হাড়ে। স্টেরয়েডের এই অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পাতলা হয়ে যাচ্ছে হাড়, যার ফলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
- করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এবং সুস্থ হওয়ার পরেও শরীরে একাধিক সমস্যা থেকেই গেছে। তারই সঙ্গে নতুন করে দেখা দিচ্ছে হাড় ক্ষয়ের সমস্যা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য যে অতিরিক্ত মাত্রায় স্টেরয়েডের ব্যবহার করা হচ্ছে, তা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ফেলছে হাড়ে। স্টেরয়েডের এই অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পাতলা হয়ে যাচ্ছে হাড়, যার ফলে অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। আর এই কারণেই চিকিৎসকরা কোভিড থেকে সুস্থ হওয়ার পর হাড়ের চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিচ্ছেন।
- কোভিড ভাইরাল সংক্রমণ এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে। এমন অবস্থায় রোগীকে সুস্থ করার জন্য অতি মাত্রায় ব্যবহার করতে হয় স্টেরয়েড। আর এই স্টেরয়েড হাড়কে ভঙ্গুর করে তুলছে এবং অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে রোগীদের মধ্যে। সাধারণত কোভিড থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে ৬ মাস থেকে এক বছর সময় লেগে যায়। তবে, পুনরুদ্ধারের বিষয়টি বয়সের ওপর নির্ভরশীল। বয়স্কদের থেকে এই ৬ মাস বা এক বছর বিষয়টা পরিবর্তনশীল। তাছাড়া করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রয়েছে বলে ইতিমধ্যেই একাধিক গবেষণা জানিয়েছে।
- যেহেতু স্টেরয়েডের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে হাড়ের ক্ষতি হওয়ার একটি সম্ভাবনা সব সময় থাকে, তাই করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর হাড়ের স্বাস্থ্য যাচাই করার জন্য হাড়ের খনিজ ঘনত্ব (bone mineral density) পরীক্ষা করার জন্য সুপারিশ করছেন চিকিৎসকেরা। তবে শুধু করোনাই নয়, আরও কয়েকটি কারণকে এখানে দায়ী করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কেমোথেরাপি, অস্টিওপোরোসিসে পারিবারিক ইতিহাস, নিয়মিত যোগব্যায়াম না করা, ধূমপান ইত্যাদি বিষয়ও এখানে করোনায় স্টেরয়েড গ্রহণের সঙ্গে একই ভাবে বিবেচিত। এই সব কারণেও অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
- যাঁরা মনে করছেন এটা শুধুমাত্র বয়স্কদের ওপর প্রভাব ফেলছে, এই ধারণা একদম ভুল। ১৮-৪০ বছরের মধ্যেও এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যদিও এর পিছনে অস্বাস্থ্যকর জীবনধারাকেই বিশেষ ভাবে দায়ী করা হয়েছে। যোগ ব্যায়াম না করা, ধূমপান, মদ্যপান থেকেও এই সমস্যা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
- তাই সময় থাকতেই এই সমস্যাকে প্রতিরোধ করতে হবে। জীবনধারার পরিবর্তন করে হাড়ের ক্ষয়কে আপনি প্রতিরোধ করতে পারেন। নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন, শরীরকে সচল রাখুন। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাদ্য খান। এর জন্য দুগ্ধজাত পণ্য, শাক-সবজি, ডিম, মাছ, ফল ইত্যাদিকে বেছে নিন। ভিটামিন ডি-এর জন্য নিয়মিত ১৫ মিনিট করে হলেও সূর্যালোকের নীচে দাঁড়ান। উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলুন। হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য পরীক্ষা করান এবং অবস্থার অবনতি হলে অ্যান্টি-অস্টিওপোরোসিস ওষুধ গ্রহণ করুন