+91 98304-64566 [email protected]

আপনার বাড়িতে যদি ডায়াবেটিসের রোগী থেকে থাকেন,তাহলে আপনি নিশ্চয়ই কখনও না কখনও এই আচমকা সুগার ফলের সমস্যায় পড়েছেন?ভাবুন তো,হাত-পা স্টিফ হয়ে যাওয়া,আচমকা উদ্বেগ,চারপাশ ঝাপসা লাগা,ক্লান্তি অনুভব করা,মাথা ধরা,ঘাম হওয়া ইত্যাদি পরিচিত সব লক্ষণই আপনি দেখতে পাচ্ছেন,বুঝতে পারছেন যে আপনার প্রিয় মানুষটির আচমকাই সুগার ডাউন হয়েছে,কিন্তু কী যে করবেন কিছুতেই বুঝতে পারছেন না।

এই আচমকা সুগার ডাউন কিন্তু যখন-তখনই হতে পারে।আর রাত-দুপুরে হলে?চিন্তার একশেষ,হসপিটালে ছোটাছুটি।আর যদি দেরী হয়ে যায়?তাহলে কিন্তু মৃত্যুও হতে পারে এই সুগার ফলে।তাই হেলাফেলা করবেন না মোটে।সুগার ফল যদি হয়ে থাকে,তাহলে সেটাকে মোকাবিলা করার অস্ত্রগুলোও জেনে নিন এবার।তবে তার আগেও জানতে হবে সুগার ডাউন হলে বুঝবেন কী করে?

সুগার ফলের লক্ষণ

১. আচমকাই খুব খিদে পাওয়া।

২. উদ্বেগ,টেনশন, হঠাৎ ভয় পেয়ে যাওয়া,হাত-পা কাঁপা।

৩. ঘাম হওয়া।

৪. ঝাপসা দেখা,ক্লান্তি অনুভব করা।

৫. ঘুমোতে সমস্যা হওয়া।

৬. মাথা ধরা।

এবার জানুন,আচমকা সুগার ডাউন হলে কী করবেন।

১. চিনি খাওয়ান

পদ্ধতি

সুগার ফলের লক্ষণগুলো যদি কারুর ক্ষেত্রে দেখেন,তাহলে তাঁকে ১ চামচ চিনি খাইয়ে দিন।এছাড়া চিনির জল,গ্লুকোজ ইত্যাদিও খাইয়ে দিতে পারেন।এমনকি মিষ্টিও খাওয়াতে পারেন।এগুলো হচ্ছে সবথেকে সহজ উপায়।খাওয়ানোর কয়েক মিনিটের মধ্যেই সুগার লেভেল খানিকটা নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করবে।

২. গুড়

চিনির মতোই গুড়ও কিন্তু সমান উপকারী আচমকা সুগার লেভেল কমে গেলে তাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে।

উপকরণ

১ চামচ গুড়,হালকা গরম জল ১ গ্লাস।

পদ্ধতি

গুড় জলে গুলে খান।সুগার আচমকা ফল করলে তো বটেই,এছাড়া আপনার যদি সুগারের মাত্রা ওঠা-নামা করে,বা টেন্ডেন্সি থাকে,তাহলে দিনে দু’বার করে নিয়ম করে খান।

৩. টম্যাটো

টম্যাটোতে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে লাইকোপিন নামক অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে,যা যকৃত আর অগ্ন্যাশয়ের সমস্যাকে দূর করে।আর অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা কিন্তু অনেকসময়েই লো ব্লাড সুগারের কারণ হয়।তাই আচমকা সুগার ফলের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ডায়েটে টম্যাটো অ্যাড করুন।

পদ্ধতি

দিনে দু’বার টম্যাটোর রস খান নিয়ম করে।তাছাড়া খাওয়ার সময় স্যালাডে নাহয় টম্যাটোকে ইনক্লুড করেই ফেলুন।দেখবেন সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই পরিস্থিতি স্টেবল হবে।

৪. আপেল

আপেলে প্রচুর পরিমাণে ক্রোমিয়াম আর ম্যাগনেসিয়াম থাকে,যা রক্তে সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।

পদ্ধতি

খাওয়ার পর দিনে অন্তত দুটো করে আপেল খাওয়া অভ্যেস করুন।সুগারের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

৫. ব্যালান্সড ডায়েট

আর ব্যালেন্সড ডায়েট করুন।মাছ,মাংস,সবজি—আপনার ডায়েটে যেন সবই থাকে।ক্রোমিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি মিনারেলস,ভিটামিন, ফাইবার যেন আপনার খাবারে থাকে।বেশী মিষ্টি খাবার কিন্তু এড়িয়ে চলাই ভালো।প্রসেস করা খাবার,অ্যালকোহল,ক্যানড খাবার,মিষ্টি ফল ইত্যাদি এড়িয়েই চলুন।

ক্রোমিয়াম যুক্ত খাবার

আলু, কড়াইশুঁটি, অয়েস্টার, হোল হুইট ব্রেড ইত্যাদি।

ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার

টুনা,কলা,বার্লি,দুধ,দই,কাঠবাদাম,কাজু,বিনস,ব্রকোলি,সয়াবিন,পালংশাক, মিষ্টি আলু,আলু।

ভিটামিন বি ৩ যুক্ত খাবার

টুনা,মাশরুম,স্যামন,চিকেন ব্রেস্ট ইত্যাদি।

ফাইবার যুক্ত খাবার

ওট ব্র্যান,আপেল ইত্যাদি।
তাছাড়া নিয়ম করে জল খান,ঘুমোন,ব্যায়াম করুন,আর ঠিকঠাক লাইফ স্টাইল মেনে চলুন।দেখবেন সুগার আপনার কন্ট্রোলে থাকছে,আর আচমকা সুগার ডাউন হওয়ার টেনশনেও আপনাকে আর আপনার বাড়ির লোককে রাতদিন থাকতে হচ্ছে না।