+91 98304-64566 atnmediicaree@gmail.com

পিরিয়ডস শেষ হয়েছে কি হয়নি,আপনি পড়লেন সাদা স্রাবের বিচ্ছিরি ঝামেলায়! সাদা স্রাব বা সোজা ভাষায় যাকে বলে হোয়াইট ডিসচার্জ, ডাক্তারি পরিভাষায় যার গালভরা নাম লিউকোরিয়া।পিরিয়ডস নিয়ে আমাদের ধারণা থাকে, ছোটবেলা থেকেই আমরা এর সাথে পরিচিত।কিন্তু সাদা স্রাবকে অনেকেই গুরুত্ব দেন না।তাই আর সবার মতো আপনিও নিশ্চয়ই লজ্জা পান সাদা স্রাবের কথায়, আর এই সমস্যার কথা চেপে যেতেই পছন্দ করেন?

কিন্তু লজ্জা পাওয়া বা চেপে যাওয়া—কোনোটাই কিন্তু খুব একটা কাজের কথা না।তাই যারা জানেন না যে, সাদা স্রাব আদতে কী, আর সাদা স্রাবের ক্ষতির কথা ভেবে যারা ভয় পান, তাঁদের জন্য রইলো আজকের ‘দাশবাস’ আর্টিকেল।

সাদা স্রাব কী

অস্বস্তির কারণ হলেও, পিরিয়ডের আগে বা পরে যোনি থেকে নির্গত ঘন সাদা স্রাব কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত নর্মাল একটা জিনিস, আর নর্মাল তো বটেই, অনেক ক্ষেত্রে সাদা স্রাব কিন্তু খুব জরুরীও বটে। অবাক হচ্ছেন তো? যে সাদা স্রাবের কথা অ্যাদ্দিন চেপে যেতেই স্বস্তি পেয়েছেন, সেটাও যে আপনার শরীরের জন্য এমন দরকারি জেনে? বরং না, ডাক্তাররা কিন্তু বলেন, সকালে উঠে আপনি যদি আপনার অন্তর্বাস শুকনো দেখতেন সাদা স্রাবের বদলে, তাহলে সেটাই কিন্তু অস্বাভাবিক হতো!

কেন সাদা স্রাব

সার্ভিক্স আর যোনিপথের দেওয়ালে উৎপন্ন এই সাদা স্রাব কিন্তু প্রধানত ঘন আঠালো মিউকাস, যাতে হালকা একধরণের বিশেষ গন্ধ থাকে।পিরিয়ডের আগে বা পরে নর্মালি সাদা স্রাব তো হয়ই, কিন্তু তাছাড়া প্রেগন্যান্সি, ওভিউলেশন, তীব্র শারীরিক উত্তেজনার সময়ও সাদা স্রাব নির্গত হটে পারে। আর আপনি কি খুব স্ট্রেসে থাকেন? তাহলেও কিন্তু আপনার সাদা স্রাব হতেই পারে।এই সাদা স্রাব কিন্তু আপনার প্রাইভেট পার্টকে ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাসের হাত থেকে রক্ষা করে একভাবে সুরক্ষিতও রাখে।এমনকি সেক্সের সময় লুব্রিক্যান্ট হিসেবেও সাদা স্রাব কাজ করতে পারে!

সাদা স্রাব কি খারাপ

সাদা স্রাব অত্যন্ত স্বাভাবিক একটা প্রাকৃতিক জিনিস।আর সেটা না হলেই কিন্তু আপনার চিন্তার কারণ হতো। তবে আপনার সাদা স্রাব যদি ‘সাদা’ না হয়ে অন্য কোনো রঙের হয়, তাহলেই কিন্তু তা চিন্তার কারণ হতেই পারে। আপনার শরীরে পি.এইচ.-এর মাত্রার পার্থক্য হলে বা যোনিতে কোনো ইনফেকশন হলেই কিন্তু এর রঙের পরিবর্তন দেখা যায়। আর তাছাড়া অতিরিক্ত সাদা স্রাব কিন্তু আপনার শরীরের পক্ষে খারাপই হতে পারে। প্রেগন্যান্সির ক্ষেত্রে নানা সমস্যা তো হয়ই, আর আরও নানা সমস্যা দেখা যায়।হরমোনের নানা সমস্যা, যোনিতে ইনফেকশন, যৌন রোগ, জরায়ুতে ক্যান্সার, পেলভিক ইনফ্লেমেশন ইত্যাদিও অতিরিক্ত সাদা স্রাবের কারণে হতে পারে।

তবে সাদা স্রাবের সমস্যায় আপনার টেনশনে পড়ার কিচ্ছু নেই। আজ ‘দাশবাসে’র তরফ থেকে রইলো কিছু ঘরোয়া টিপস।দেখে নিন।

১.মেথি চা

প্রাচীনকাল থেকেই কিন্তু মেথিকে নানা চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়ে আসছে।আর মেয়েদের নানা রোগে,হরমোনের ব্যালেন্স বজায় রাখতে মেথির জুড়ি নেই।

মেথির দানাকে ভালো করে গুঁড়ো করে নিন।তারপর জলে ওটাকে ফোটান ভালো করে।১৫ মিনিট মতো রেখে খেয়ে ফেলুন।দিনে অন্তত দু’বার করে এই মেথি চা খেয়েই দেখুন।খুব তাড়াতাড়ি উপকার পাবেন।

২. টকদই

টকদই তো রোজ দুপুরে আপনি খেয়েই থাকেন। যোনিপথের ফাঙ্গাস, ব্যাকটেরিয়াকে দূরে সরাতে কিন্তু টকদইয়ের জুড়ি নেই।কারণ এতে থাকে ল্যাক্টোব্যাসিলি, যা আপনার যোনিকে হেলদি রাখতে সাহায্য করে।

দুপুরে খাওয়ার পর জাস্ট হাফ কাপ টকদই নিয়ম করে খেয়ে নিন। আর ইনফেকশনের বাড়াবাড়ি হলে তুলোয় করে একটুখানি টকদই নিয়ে আপনার যোনিতে মাখিয়ে নিন।উপকার পাবেন। আর হ্যাঁ, লাঞ্চের পর টকদইকে নাহয় এবার থেকে আপনার ডায়েটে অ্যাড করে নিন।

৩. রসুন

রসুন কিন্তু দারুণ অ্যান্টি-বায়োটিক হিসেবে কাজ করে।তাই অতিরিক্ত সাদা স্রাব বা ইনফেকশন হয়েছে বুঝলেই রসুনকে কাজে লাগান।

হালকা গরম জলে ১ টা রসুনের কোয়া থেঁতো করে ১০ মিনিট রেখে খেয়ে ফেলুন।খালি পেটে রোজ সকালে উঠে নিয়ম করে দু সপ্তাহ যদি খেয়ে যেতে পারেন, তাহলে আপনার সাদা স্রাবের সমস্যা আর পালাতে পথ পাবে না।

আর হ্যাঁ, হেলদি হাইজিন মেন্টেন করতে কিন্তু ভুলবেন না।নিজেকে পরিষ্কার রাখুন, আর সুস্থ জীবনযাপন করুন।

তাহলে আর চিন্তা কীসের? ‘দাশবাসে’র ঘরোয়া টিপস ফলো করুন কাল থেকেই। আর অতিরিক্ত সাদা স্রাব যদি আপনার হয়, তাহলে সতর্ক থাকুন, আর হ্যাঁ, রঙের দিকে খেয়াল রাখতে কিন্তু ভুলবেন না।সমস্যার বাড়াবাড়ি হলেই ডাক্তার দেখান।